🌸 সুন্দর ফুলের ছবি – একটি গল্প 🌸
(বাংলা সংষ্করণ)
ছোট্ট একটা গ্রাম ছিল পাহাড়ের কোলে, সবুজে মোড়া, পাখির ডাকে মুখরিত। সেই গ্রামে থাকত মেয়েটি—তার নাম ছিল মায়া। মায়া খুব সাধারণ এক মেয়ে হলেও, তার চোখে ছিল এক অসাধারণ দৃষ্টি—সে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে পারত হৃদয় দিয়ে।
মায়ার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ছিল ফুল। প্রতিদিন ভোরে সে ছোট্ট খাতা আর রঙপেন্সিল নিয়ে বেরিয়ে পড়ত গ্রামের পাশের বাগানে। ফুলের ছবি আঁকত সে—গোলাপ, রজনীগন্ধা, সূর্যমুখী, বেলি—যা চোখে পড়ে, তা-ই।
একদিন, হঠাৎ সে এক অচেনা পথ ধরে হেঁটে চলে যায় এক গভীর জঙ্গলে। জঙ্গলের মাঝখানে সে দেখে একটা আশ্চর্য ফুল—সে যেন একেবারে স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে! ফুলটির পাঁপড়ি ছিল রঙ বদলানো—কখনো নীল, কখনো সোনালি, আবার কখনো হালকা বেগুনি।
মায়া চমকে যায়। সে নিজের খাতা খুলে খুব সাবধানে ফুলটির ছবি আঁকে। ঠিক তখনই হালকা বাতাস বইতে শুরু করে, আর একটা মৃদু কণ্ঠস্বর শোনা যায়,
"তুমি আমাকে দেখেছো… অনেক বছর পর কেউ আমাকে দেখল।"
মায়া ভয় পেয়ে যায়, কিন্তু চারপাশে কেউ নেই। ফুলটা আবার দুলে ওঠে, আর সেই কণ্ঠস্বর বলে,
"তুমি আমার ছবি এঁকেছো… এখন থেকে তুমি যা আঁকবে, তা শুধু সুন্দরই হবে না—তা মানুষকে ভালোবাসা আর শান্তি দেবে।"
এরপর থেকে মায়ার আঁকা সব ছবি যেন জাদুময় হয়ে উঠল। কেউ কাঁদলে, মায়ার আঁকা ফুলের ছবি দেখে তার মন ভালো হয়ে যেত। কেউ অসুস্থ হলে, সেই ছবির সামনে বসে থাকলেই তার শরীর যেন একটু ভালো লাগত।
মায়া সেই জাদুকরী ফুলের কথা কাউকে বলেনি। কিন্তু তার ঘরের এক কোণে একটা ফ্রেমে বাঁধানো একটা ছবি ছিল—একটা অদ্ভুত, অপার্থিব ফুলের ছবি।
আর আজও, কেউ যদি সেই ছবির সামনে দাঁড়ায়, দেখা যায়—পাঁপড়ির রঙ একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে...
0 Comments